প্রবাসি শরীফ, বাবার মৃত্যুর খবর শুনে দেশে এসে ১০ বছর শিকলবন্দী

শিক্ষিত মেধাবী শরিফ নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কাজিরচর গ্রামের বাসিন্দা তিনি , তার বয়স (৪৫) । দীর্ঘ১০ বছর ধরে শিকলবন্দী জীবন যাপন করছেন এই প্রবাসী। প্রবাস জীবন কাটিয়ে তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে দেশে ফিরেছিলেন। দেশে ফেরার কিছুদিন পর থেকেই বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন বিএ পাস এই ব্যক্তি।
জানা গেছে, তার বাবা রৌশন আলী ভূঁইয়া মারা যায়, তখন শরীফ প্রবাসে ছিলেন । বাবা মারা যাওয়ার দুই মাস পর শরীফ ছুটি নিয়ে দেশে আসে। দেশে আসার পর বাবার শোকে এক বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। এসময় মাঝে-মধ্যে তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর ও গালমন্দ করেন।

পরে এ ধরনের আচরণ দেখে পরিবারের সদস্যরা তাকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে। বিয়ের পর মানসিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ায় তার নবাগত স্ত্রী দুই মাস থাকার পর অসুস্থ স্বামীকে ছেড়ে চলে যায়। তার অভিভাবকেরা চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ৩মাস ৮দিন চিকিৎসা করার পর তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।

পরে তাকে আবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় কোন পরিবর্তন ও প্রতিকার না হওয়ায় তাকে বাড়িতে ফেরৎ নিয়ে আসা হয় । বাড়িতে আনার পর থেকে দুই হাতে ও দুই পায়ে শিকল পরিহীত তালাবদ্ধ অবস্থায় তার জীবন কাটছে দশ বছর ধরে।

তার মা লিলি বেগম বলেন, ছেলেটিকে নিয়ে বড় অসহায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমাদের। আমি মারা গেলে আমার ছেলের দেখাশেনা কে করবে, এই বিষয়ে আমি খুব চিন্তায় আছি। বাড়িতে আমার কোন ছেলেরা স্থায়ী ভাবে বসবাস করে না সকলেই প্রবাসী।